হাইকোর্ট বলেছেন, বৈধ ব্যবসা এবং অন্যান্য পেশার আশ্রয় নিয়ে অর্থ-সম্পত্তি অর্জনের অনেক উপায় রয়েছে। তবে অর্থ উপার্জনের জন্য রাজনীতি কোনো পেশার আওতায় আসতে পারে না।
মঙ্গলবার দুর্নীতি মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবার হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের সাজা বহালের রায়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।
ওই মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেন, দুর্নীতি সব লিঙ্গ, বয়স এবং বর্ণের মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি দরিদ্র এবং দুর্বল গোষ্ঠীকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করে। দেশের জনগণ বিশেষ করে দায়িত্বশীল স্টেকহোল্ডারদের একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা উচিত যে, তারা কেবল দুর্নীতির শিকারই নন, এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের মূল খেলোয়াড়ও।
পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেন, দুর্নীতিবাজরা তাদের সমালোচকদের চুপ করতে এবং চুরি করা সম্পদ লুকানোর জন্য একে অপরকে সাহায্য করে। তাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার সময় এসেছে। আদালত বলেন, বিশ্ব ও বাংলাদেশের পরিবর্তনের অপেক্ষায় নাগরিকরা বসে থাকতে পারেন না, আমাদের প্রত্যেককে সেই পরিবর্তনের অংশ হতে হবে। বাংলাদেশিদের জন্য বাংলাদেশি ছাড়া কেউ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে না। এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত সবাইকে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে।
রায়ে আদালত আরও বলেন, আপনি যদি বিশ্বে পরিবর্তন আনতে চান এবং বাংলাদেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চান তাহলে এর বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনার জন্য একটি কার্যকর ও শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তোলার পাশাপাশি হিসাব দেওয়ার দায়িত্ব থাকতে হবে। আইনের বিধান অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ছেলেবেলা ও বাল্যকাল থেকেই শিশুদের সততা এবং অসততার মধ্যে পার্থক্য করতে শেখানো উচিত বলে মন্তব্য করেন আদালত।
এর আগে দুর্নীতির মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের আপিল খারিজ করে বিচারিক আদালতের সাজার রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড, আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন। পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।