দুপুর সাড়ে ১২টায় মামলার যুক্তিতর্কে ৩১ বছর আগে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের ফিরিস্তি তুলে ধরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী আদালতকে বলেন, ‘২৮ বছরের যুবক খাইরুল আমিন সিকদার কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পবিত্র রমজানের সময় মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মামলার ৪৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতিমধ্যে ৩৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এটি ৩১ বছরের পুরোনো মামলা। ২০০২ সালে এসে আমরা বাদীপক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেছিলাম। আজ ২০২১ সালে এসে যুক্তিতর্ক করছি।’
বেলা পৌনে তিনটা পর্যন্ত সৈয়দ হায়দার আলী মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, বাদীর জবানবন্দি নিয়ে যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করেন। এরপর আদালত মুলতবি হয়। পরবর্তী যুক্তিতর্কের জন্য জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে যেকোনো দুই দিন তারিখ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়।
আইনজীবীরা জানান, জানুয়ারি মাসে বাদীপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শুরু হবে। এরপর মামলার রায় ঘোষণা করবেন বিচারক।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এম মাসুদ আলম চৌধুরী বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় আসামিদের সর্বনিম্ন যাবজ্জীবন এবং সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এ মামলার আসামি ২৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন চারজন। তাঁরা হলেন মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, স্থানীয় বাসিন্দা রহিম সিকদার, আমির হোসেন ও আজিজুল হক। দুজন আসামি জহির উদ্দিন ও মো. ইব্রাহিম হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। যুক্তিতর্কের সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন অবশিষ্ট আসামিরা। তাঁরা জামিনে আছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক খাইরুল আমিন সিকদার (২৮)। তিনি গোরকঘাটার হামজা মিয়া সিকদারের ছেলে। ওই দিন নিহত খাইরুল আমিনের বড় ভাই মাহমুদুল করিম বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ওই বছরের ২২ নভেম্বর।
২০০৩ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
মামলার বাদী মাহমুদুল করিম বলেন, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুর বক্সের নেতৃত্বে আসামিরা প্রকাশ্যে গুলি করে খাইরুল আমিন সিকদারকে হত্যা করেন। তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চান।