প্রতি বছর উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশের অনেকেই পাড়ি জমান পাশ্ববর্তী ভারতে। কিন্তু না বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে সার্টিফিকেট হতে পারে মূল্যহীন। কেননা, ভারতে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। এমনই ২১টি ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছে ভারতের ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্ড কমিশন (ইউজিসি)।ভারতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে আসার আগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরো সতর্ক হওয়ার আহবান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউজিসি জানিয়েছে, এই ২১ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বৈধ নয়। ভারতের ইউজিসির প্রকাশিত ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় সর্বোচ্চ আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দিল্লির।
দিল্লির পরেই তালিকায় সর্বাধিক চারটি নাম আছে উত্তর প্রদেশ থেকে। পশ্চিমবঙ্গের দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম আছে ওই তালিকায়। ওই দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই রাজ্যর রাজধানী কলকাতায়। দক্ষিণের রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশের দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভুয়া। ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কেরালা, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, পদুচেরিতেও।
দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব পাবলিক অ্যান্ড ফিজিক্যাল হেলথ সায়েন্সেস; কমার্শিয়াল ইউনিভার্সিটি লিমিটেড; ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি; ভোকেশনাল ইউনিভার্সিটি; এডিআর-সেন্ট্রিক জুরিডিক্যাল ইউনিভার্সিটি; ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং; বিশ্বকর্মা ওপেন ইউনিভার্সিটি ফর সেলফ-এমপ্লয়মেন্ট; আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় (স্পিরিচুয়াল ইউনিভার্সিটি)।
উত্তর প্রদেশের ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো গান্ধী হিন্দি বিদ্যাপীঠ; নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ইউনিভার্সিটি; ভারতীয় শিক্ষা পরিষদ; মহামায়া টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি।
কলকাতার দুটো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অলটারনেটিভ মেডিসিন; ইনস্টিটিউট অব অলটারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ।
অন্ধ্র প্রদেশেরও ভুয়া দুটো বিশ্ববিদ্যলয় হলো ক্রিস্ট নিউ টেস্টামেন্ট ডিমড ইউনিভার্সিটি ও বাইবেল ওপেন ইউনিভার্সিটি অব ইন্ডিয়া।
কর্ণাটকের ভুয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো বাদাগানভি সরকার ওয়ার্ল্ড ওপেন ইউনিভার্সিটি এডুকেশন সোসাইটি, কেরালায় আছে দুটি ভুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যা কোনো সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয় দুটি হলো কেরালার কিষাণত্তমে অবস্থিত সেন্ট জনস ইউনিভার্সিটি এবং কুন্নামঙ্গলম কোঝিকোড়ে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব প্রফেটিক মেডিসিন, পুদুচেরির শ্রী বোধি একাডেমি অব হায়ার এডুকেশন।
এর আগে ২০২৪ সালের মে মাসেও ইউজিসির পক্ষ থেকে এমনই ভুয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ পেয়েছিল, এবারে সেই তালিকার কোনো বদল হয়নি। সমাজমাধ্যমে আবার উঠে এসেছে এই তালিকা।
সূত্র: ভারতের বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন
বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের তালিকা একসাথে দেওয়া হলো:
১) ক্রাইস্ট নিউ টেস্টামেন্ট ডিমড ইউনিভার্সিটি, গুন্টুর
২) বাইবল ওপেন ইউনিভার্সিটি অফ ইন্ডিয়া, ভাইজ্যাগ
৩) এআইআইপিএইচএস গভর্নমেন্ট ইউনিভার্সিটি, দিল্লি
৪) কমার্শিয়াল ইউনিভার্সিটি লিমিটেড, দিল্লি
৫) ইউনাইটেড নেশনস ইউনিভার্সিটি, দিল্লি
৬) ভোকেশনাল ইউনিভার্সিটি, দিল্লি
৭) এডিআর সেন্ট্রিক জুরিসডিকাল ইউনিভার্সিটি, দিল্লি
৮) আইআইএসই, দিল্লি
৯) বিশ্বকর্মা ওপেন ইউনিভার্সিটি ফর সেলফ এমপ্লয়মেন্ট, দিল্লি
১০) আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি
১১) বড়গণভি সরকার ওয়ার্ল্ড ওপেন ইউনিভার্সিটি, বেলগাঁও
১২) সেন্ট জনস ইউনিভার্সিটি, কেরালা
১৩) আইআইইউপিএম, কোঝিকোড়ে
১৪) রাজা আরাবিক ইউনিভার্সিটি, নাগপুর
১৫) শ্রী বোধি অ্যাকাডেমি অফ হায়ার এডুকেশন, পণ্ডিচেরি
১৬) গান্ধী হিন্দি বিদ্যাপীঠ, প্রয়াগ, এলাহাবাদ
১৭) নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বিশ্ববিদ্যালয়, আলিগড়
১৮) ভারতীয় শিক্ষা পরিষদ, লক্ষ্ণৌ
১৯) মহামায়া টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি, নয়ডা
২০) ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন, কলকাতা
২১) ইনস্টিটিউট অফ অল্টারনেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ, কলকাতা