টেকনাফের হ্নীলা বাজারের পশ্চিম পাশে অভিযান চালিয়ে শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের ইয়াবা কেনা-বেচার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার চক্রের শীর্ষ হুন্ডি ব্যবসায়ী মোহাম্মদ নূরকে হুন্ডির ৯ লক্ষ ১১ হাজার ৫৬০ টাকা, ৪ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা, ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের জমা ও চেকবইসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
গ্রেফতারকমত মাদক কারবারি হলেন, টেকনাফ হ্নীলা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ওয়াব্রাং মৃত কালা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ নূর (৩১)।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে,টেকনাফ থানাধীন হ্নীলা ইউনিয়নের বড় বাজারের পশ্চিম পার্শ্বে দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার পাশে থাকা তিন তলা বিশিষ্ট মাস্টার মার্কেটের নীচ তলার ইছহাক কম্পিউটার সেন্টারের ভিতর অবৈধ মাদকদ্রব্য মজুদসহ ক্রয়-বিক্রয় করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এসময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালানোর চেষ্টাকালে মোহাম্মদ নূর নামে এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিতি স্বাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির দেহ ও তার দোকান তল্লাশি করে দোকানের টেবিলের ড্রয়ারের ভিতর বিশেষ কায়দায় রক্ষিত সর্বমোট ৪ হাজার ৮শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। একই সাথে মাদক বিক্রয়/ইয়াবা কেনা-বেচার টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাচার লক্ষ্যে মজুদকৃত নগদ ৯ লক্ষ ১১ হাজার ৫৩০ টাকা, হুন্ডির কাজে ব্যবহৃত ১টি এইচপি ব্রান্ডের ল্যাপটপ, ২টি এন্ড্রয়েড ও ১টি বাটন মোবাইল, বিভিন্ন ব্যাংকের সর্বমোট ৯টি হিসাবের জমা বই, বিভিন্ন ব্যাংকের সর্বমোট ৩৬টি চেকবই এবং ১টি লাল রংয়ের কাভার বিশিষ্ট ডায়েরি জব্দ করা হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের টাকা পরিশোধ করে। স্থানীয় কিছু বিকাশ এজেন্ট এবং এজেন্ট ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান এই হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। এরমধ্যে গ্রেফতারকৃত মোঃ নূর শীর্ষ পর্যায়ের হুন্ডি ব্যবসায়ী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নূর একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী ও মাদক কারবারির সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে টাকা সংগ্রহ করে সে পার্শ্ববর্তী দেশের এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করে। পরবর্তী ঐ দেশের এজেন্টরা পুনরায় বাংলাদেশের কোন একটা ব্যাংক নাম্বার বা বিকাশ নাম্বার প্রদান করে ওই নাম্বারে মাদকের টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য বলে। এই টাকাগুলো মধ্যপ্রাচ্য বিভিন্ন দেশ হয়ে হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে প্রবেশ করে এবং গ্রেফতারকৃত মো. নূর এই কাজে লাখে ২০০/৪০০ টাকা কমিশন নিতো। এছাড়াও হুন্ডি ব্যবসার আড়ালে সে দীর্ঘ দিন যাবত মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট পার্শ্ববর্তী সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিল।
তিনি আরো জানান,উদ্ধারকৃত আলামতসহ ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।