জমকালো আয়োজনে দৈনিক গণসংযোগ এর বার্ষিক মিলনমেলা সম্পন্ন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি                                                              জমকালো আয়োজনে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকার বার্ষিক মিলনমেলা—২০২৫’র দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের পর্যটন হোটেল শৈবাল কনভেশন হলে এ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, আরটিভি’র কক্সবাজার প্রতিনিধি সাইফুর রহিম শাহীন।
নির্বাহী সম্পাদক জাহেদ হোসেন’র সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জেলা ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি আপেল মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আমীরে জামায়াত কক্সবাজার জেলা মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী, পুলিশের সার্কেল এসপি মো.জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) শারমিন সুলতানা প্রমুখ সহ পত্রিকা সংশ্লিষ্টরা।

মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ও কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারের সংবাদ মাধ্যম গণ মানুষের দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকা পর্যটন শিল্প উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। তার জন্য গণসংযোগ পরিবারের সবাইকে অভিনন্দন জানাই।
পরিবর্তিত সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। তথ্যনির্ভর সমাজ গঠনের পথ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ, লালন ও পরিচর্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তেমনি গণসংযোগ পত্রিকা দেশের পক্ষে কাজ করছে। কক্সবাজারের সমস্যা—সম্ভাবনা, অনিয়ম—দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়ন এবং মাদক নির্মুলে লিখনি শক্তি দিয়ে প্রতিবাদের ধারা অব্যাহত রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, গণসংযোগ পত্রিকা সাদা’কে সাদা, কালো’কে কালো লিখে পথচলা অব্যাহত রেখেছে। এ পত্রিকার সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকরা তাদের প্রিয় প্রতিষ্ঠান গণসংযোগ’কে পাঠকের দৌরগৌড়ায় পৌছাতে সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার জেলা জামায়াত ইসলামীর আমীর মাওলানা নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার যে রুলস, তা অনুসরণ করে দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকা কক্সবাজার বাসীর আশা— আকাংখার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে। আমিও এই পত্রিকার লিখনি প্রতিবেদন অনুসরণ করি, মুল্যায়ন করি। উক্ত পত্রিকার আগামীর পথচলা আরোও মসৃন হোক সফলতা কামনা করছি।
তিনি বলেন, এদেশের গণমাধ্যম দেশ ও জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তেমনি গণসংযোগ পত্রিকাও অতীতের ধারাবাহিকতায় সাহসী, নির্মোহ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চায় অব্যাহত ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করি। অতীতের লিখনির জন্য গণসংযোগ পত্রিকা প্রশংসার দাবি রাখেন। নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, গণসংযোগ পত্রিকার লেখনি শক্তির কারণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে প্রসার ঘটছে। এই পত্রিকা ব্যাপক ভুমিকা রাখছে। ফলে কক্সবাজার এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের দরবারে কক্সবাজার পর্যটন রাজধানীর খ্যাতি অর্জন করেছে।এই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ইতিমধ্যে কক্সবাজার ব্যাপক সমাদৃত পর্যটকদের কাছে।আমি আশা করি, দৈনিক গণসংযোগ পত্রিকা পাঠকের চাহিদা ও পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পাঠকের মাঝে পেঁৗছে দিতে সচেষ্ট হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবুল কাসেম বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহৎ পেশা। এ পেশার মর্যাদা অপরিসীম। আর সংবাদপত্র সমাজের দর্পন। সাংবাদিকতা পেশায় আসা সহজ, কিন্তু এ পেশা মাঝপথে ছেড়ে যাওয়াটা কঠিন। সাংবাদিকতা মানে একেকটি সংবাদের একেকজন শত্রু সৃষ্টি করা। ২০ টি প্রতিবেদন করলেন, ২০ জন শত্রু সৃষ্টি হলো। সাংবাদিকতায়, একজন সাংবাদিকের নীতি—নৈতিকতা, সততা ও সাংসিকতার বড়ই প্রয়োজন। বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল এবং অনুসন্ধানের সক্ষমতা থাকতে হবে। এসব বৈশিষ্ট্য যার আছে, সে পেশাদার সাংবাদিক। একজন পেশাদার সাংবাদিকের কোন বন্ধু নেই। মুহাম্মদ আবুল কাসেম আরো বলেন, এ পেশার মূল লক্ষ্য হলো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা। মানুষের কথা বলা। মানুষের সমস্যা, সমাজের নানা অসঙ্গতি অনিয়ম অবিচার তুলে ধরা। মুদ্দকথা দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে কাজ করা। মফস্বলেও এ পেশায় আত্মনিয়োগ করে সাংবাদিকরা জনসেবা ও সমাজকল্যাণ কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
কিছু পাওয়ার জন্য নয়, নিতান্ত ভালোবাসা ও জনসেবার মহৎ উদ্দেশ্য থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এ পেশায় আসেন একজন প্রকৃত সাংবাদিক। একজন ভালো সাংবাদিককে যেমন সাহসী হতে হয়— তেমনি সত্যনিষ্ঠ ও নীতির প্রশ্নে আপসহীন এবং ন্যায়ের প্রশ্নে অবিচল থাকতে হয়। ঝুঁকি থাকলেও অনেকেই ভালোবাসার কারণে এ পেশাকে বেছে নেন এবং আজীবন সাংবাদিকতায় অবিচল থাকেন। যারা অকপট সততার সঙ্গে এ পেশায় সক্রিয় থাকেন, তাদের এক ধরনের আত্মতৃপ্তি থাকে। ভালো কাজের জন্য আনন্দ থাকে। তাদের কাজ মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনা। বাহবা কুড়ানোর অভিপ্রায় ও অর্থলিপ্সুতা তাদের থাকে না। অর্থকড়ি উপার্জন তাদের উদ্দেশ্য নয়।
প্রতিপত্তির চাহিদা থেকে একজন প্রকৃত সাংবাদিক দূরে থাকেন সবসময়। জনসেবার জন্য সাংবাদিকতা করেন। অমিত সাহস নিয়ে ছুটে যান খবরের কাছে। অনেক পরিশ্রম করে তথ্য তুলে আনেন ঘটনার গভীর থেকে। অসীম সাহসিকতার সঙ্গে নানা বৈরী পরিবেশের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় অবিরাম। প্রচুর পড়াশোনা করতে হয় একজন ভালো সাংবাদিকের। যাতে তার লেখনীতে মেধার স্ফুরণ ঘটে। সাংবাদিকতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি। আমরা যে সমাজে বাস করি এখানে সাংবাদিকতার ঝুঁকি অনেক। কক্সবাজার মাদক প্রবন এলাকা।অনেক সময় মামলা ও শারীরিক আক্রমণের শিকার হতে হয়।
নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সাংবাদিকতা করতে হয়। একজন সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা। সে জন্য গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। এই দর্পণে প্রতিবিম্বিত হয় সমাজের প্রতিচিত্র। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ, শোষণ—বঞ্চনা ও অধিকার হরণের বিরুদ্ধে একজন সাংবাদিককে সোচ্চার থাকতে হয় সবসময়। চোখ রাঙানোকে গণ্য না করে নির্ভীক ও নিরলসভাবে কাজ করতে হয়। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার চিত্র প্রত্যক্ষ করতে হয়। মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করতে হয়। অনেক বাধা বিপত্তির মধ্যে তাদের দিন যায়। ক্ষমতাধরদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয়। অভাব অনটনের ভেতর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হয়। পরিশ্রম করতে হয় অনেক। সততা নীতি ও আদর্শ নিয়ে যারা সাংবাদিকতা করেন অর্থাভাব তাদের নিত্যসঙ্গী। টানাপড়েনের ভেতর দিয়ে তাদের চলতে হয়। সংসার চালানো তাদের জন্য বড় কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। দারিদ্রের ঘেরাটোপে বন্দি থেকে তাদের জীবন কাটাতে হয়। এর ব্যতিক্রম চিত্রও আমরা দেখতে পাই। অযোগ্য অর্বাচীন কিছু মানুষের পদচারণায় কলঙ্কিত হতে দেখা যায়, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার গৌরবময় জগৎ। কোনো মহৎ উদ্দেশ্য থেকে নয় অর্থ লিপ্সুতা থেকে এবং সমাজে প্রভাব তৈরি করার ইচ্ছে থেকে অনেকে এ পেশার সঙ্গে যুক্ত হন। ভুঁইফোড় সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা নানা ধান্ধাবাজি করে। তারা হলুদ সাংবাদিক। এটাকে বলে অপসাংবাদিকতা।
নানারকম অপতৎপরতায় লিপ্ত থাকেন তারা। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে সংবাদ পরিবেশনের হুমকি দেয়। ভয় ভীতি প্রদর্শন করে দেদারসে অর্থ আদায় করেন। খুব অল্পসময়ের মধ্যে এরা অর্থ সম্পদের মালিক হয়ে যায়। একই ধরনের কিছুসংখ্যক ব্যক্তি মিলে গড়ে তোলে সাংবাদিক সিন্ডিকেট। এদের পড়াশোনা ও মেধার ঘাটতি থাকে। সাংবাদিকতার সঠিক সংজ্ঞাও এরা জানে না। দু’য়েক জন সাংবাদিকের সঙ্গে এরা সুসম্পর্ক তৈরি করে।তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত লিখিত নিউজ কপি করে সংবাদ মাধ্যমে প্রেরণ করে। অজ্ঞতা অনেক থাকলেও এরা সাংবাদিকতার তকমা পরে ঘুরে বেড়ায় দাপিয়ে। লেখালেখির দক্ষতা এদের একেবারেই ক্ষীণ। শুদ্ধভাবে একটি বাক্য লেখার ক্ষমতা অনেকেরই নেই। এদের কারণে সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে।
কলুষিত হচ্ছে সাংবাদিকতার জগৎ। এদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে সবার রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন। সাংবাদিকতার মর্যাদা অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখার জন্য সাংবাদিকদেরই পদক্ষেপ নেয়া দরকার। এবং সাংবাদিকদের উচিত এদের অসহযোগিতা করা। ভুয়া সাংবাদিকদের নির্মূল করার জন্য মোক্ষম ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

পূর্বের খবরসফলতার স্বর্ণ শিখরে কুতুবজোম ইসলামিয়া কে.জি এন্ড প্রি-ক্যাডেট মাদ্রাসা”
পরবর্তি খবরইউনিয়ন হসপিটাল’র সংবাদ সম্মেলন