ঈদে ঘরে ফিরতে ইচ্ছুক মানুষ ট্রেনের টিকিট পাচ্ছিল না সহজে। সেহরির পর লাইনে দাঁড়িয়েও সোনার হরিণ বনে যাওয়া টিকিট মিলছিল না। পাবেই বা কীভাবে, শর্ষেতেই যে ভূত। যে সহজ ডটকম টিকিট বিক্রির দায়িত্বে, সেই প্রতিষ্ঠানেরই কর্মকর্তা হাজার হাজার টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন। অবশেষে সহজ ডটকমের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম ও তার সহযোগী এমরানুল
আলম সম্রাটকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গত বুধবার ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেল স্টেশন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের স্মার্টফোন থেকে অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করা বিপুল পরিমাণ ই-টিকিট জব্দ করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব ১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন বলেন, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের সার্ভার রুম থেকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের জন্য সহজ ডটকমের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রেলওয়ে টিকিট কালোবাজারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পর্যবেক্ষণ করে টিকিট কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে কালোবাজারে টিকিট বিক্রিতে তার সহযোগী সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা মোমেন আরও বলেন, রেলওয়ে ই-টিকিটিং সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুবিধা নিয়ে রেজাউল সার্ভার থেকে অবৈধ উপায়ে টিকিট বুক ও ক্রয় করতেন। ব্যক্তিগত পরিচিতদের কাছে প্রতি টিকিট প্রায় ৫০০ টাকা অতিরিক্ত দামে বিক্রি করতেন। অন্যদের ক্ষেত্রে ১,০০০-১,৫০০ টাকা অতিরিক্ত নেন। রেজাউলের দাবি, রেলওয়েতে ভিআইপিদের টিকিটের আবদার মেটানোর কারণে তিনি নির্বিঘ্নে এই কাজ করতে পারছিলেন। তিনি একটি বড় ক্রেতা শ্রেণি গড়ে তুলে ছিলেন। এভাবে প্রতি মৌসুমে তিনি প্রায় ১০-১২ লাখ টাকার মতো হাতিয়ে নিতেন।