প্রতিষ্ঠানের পাশে পুঁতে রাখা খণ্ডিত মরদেহের ৫ টুকরো উদ্ধার করে র্যাব এর সদস্যরা। আর বাকি এক টুকরো (মাথা) রাজধানীর আশকোনা এলাকা থেকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে র্যাব। এ ঘটনায় সেই দুই শিক্ষকসহ তিন জনকে আটক করেছে র্যাব।
সোমবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকে দুপর পর্যন্ত আশুলিয়ার ছয়তলা এলাকায় সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠ থেকে মরদেহের ৫ টুকরা উদ্ধার শেষে র্যাব এর প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানানো হয়।
এসময় র্যাব সদর দফতরের মিডিয়া উইং কমান্ডার মঈন খান জানান, গত ১৩ জুলাই (মঙ্গলবার) আশুলিয়ার জামগড়া সংলগ্ন বেরন এলাকার রূপায়ন মাঠের নিজ বাসা ‘স্বপ্ন নিবাস’ থেকেই নিখোঁজ হন মিন্টু চন্দ্র বর্মণ। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ৭ দিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে অবশেষে ২২ জুলাই আশুলিয়া থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন মিন্টুর ছোট ভাই দীপক চন্দ্র বর্মণ। পরে ৯ আগস্ট ছায়া তদন্ত করে তিনজনকে গ্রেফতার করে মরদেহের লোকেশন শনাক্ত করে র্যাব। আজ বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অভিযান পরিচালনা করে মরদেহের ৫ টুকরো উদ্ধার করা হয়। বাকি এক টুকরো উদ্ধারে আশকোনা এলাকায় অভিযান চলছে।
তিনি আরো বলেন, মিন্টু বর্মণের সুনাম ও খুব ভাল শিক্ষক হওয়ায় পেশাগত হিংসা শুরু করেন গ্রেফতার শিক্ষকরা। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। এর জেরেই তাকে হত্যা করে পুঁতে রাখেন তারা। এরপর থেকেই রবিউল পলাতক ছিলেন। গত মধ্যরাতে রবিউলকে আব্দুল্লাপুর থেকে, তার ভাগিনা বাদশাকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থেকে আর মোতালেবকে আশকোনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে রবিউলের দেওয়া তথ্যমতে স্কুলের মাঠ থেকে মিন্টুর দেহের ৫টি খণ্ডিতাংশ উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে, প্রথমে গত ৭ জুলাই মিন্টুকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাদশা, মোতালেব ও রবিউল। পরে ১৩ জুলাই স্কুলটিতে কোচিং পরবর্তী সময়ে ১০৬ নম্বরে মিন্টুকে ডেকে নিয়ে যায় বাদশা ও মোতালেব। এসময় মিন্টুর মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে বাদশা। পরে ৬ টুকরো করে মাথা রাজধানীর আশকোনার একটি ডোবায় ফেলে দেয়। বাকি ৫ টুকরা স্কুলের মাঠে পুঁতে রাখে।
নিহত মিন্টু চন্দ্র বর্মণ লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াইপাড়া গ্রামের শর্ত বর্মণের ছেলে। তিনি সাভার রেসিডেন্সিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি অনেক মেধাবী ও সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন।