জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এর মধ্যে ২৯ শতাংশ শিশুর মারাত্মকভাবে স্মার্টফোনের আসক্তি রয়েছে। অপরদিকে, প্রতি ১০ জন মায়ের মধ্যে ৪ জনই সন্তানের স্মার্টফোনের আসক্তি সম্পর্কে জানেন না।
সম্প্রতি তিন থেকে পাঁচ বছরের ৪০০ প্রি-স্কুল শিশুর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণার মূল প্রবন্ধটি ‘এলসভিয়ারের জার্নাল অব ইফেক্টিভ ডিসঅর্ডার’ নামে জার্নালের ৩২৯ নম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হয়েছে।
পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ নাজমুল হক, সহযোগী অধ্যাপক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং আর টি এম আল-কবির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক ফারুক আব্দুল্লাহ্-এর নেতৃত্বে একটি গবেষক দল গবেষণা কর্মটি পরিচালনা করেছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, খেলার মাঠের অভাবে ৫২ শতাংশ ও খেলার সাথীর অভাবে ৪২ শতাংশ শিশু স্মার্টফোনের দিকে আসক্ত হচ্ছে। ৭৯ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু কার্টুন বা কল্পকাহিনী দেখার জন্য, ৪৯ শতাংশ গেম খেলার জন্য, ৪৫ শতাংশ শিশু টেলিভিশন/ভিডিও দেখা বা গান শোনার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে। অন্যদিকে, শুধু ১৪ শতাংশ শিশু অধ্যায়নের উদ্দেশ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার করে।
এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) কর্তৃক সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় ৩ গুণ।
অবিভাবকরা কেন সন্তানদের স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেন এই প্রশ্নের জবাবে, ৭৩ শতাংশ মা বলেছেন, তারা তাদের বাচ্চাদের স্মার্টফোনের সাথে ব্যস্ত রাখতে চান, যাতে তারা তাদের কাজ বিনা বাধায় করতে পারেন। ৭০ শতাংশ মা তাদের বাচ্চাদের স্মার্টফোন দেন কারণ তাদের বাচ্চারা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পছন্দ করে। ৬৭ শতাংশ মা তাদের সন্তানকে খাওয়ানোর জন্য এবং ৩১ শতাংশ মা শিশুকে ঘুম পারানোর জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করেন।
এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে , স্মার্টফোন আসক্তিতে বাচ্চাদের ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন, কারণ ছাড়াই রেগে যাওয়া, অপর্যাপ্ত এবং অনিয়মিত ঘুম, অমনযোগিতা, ভুলে যাওয়া, ভাষার দক্ষতা বিকাশ না হওয়া এবং ভাই-বোন, বাবা-মা ও খেলার সাথীদের সাথে বিচ্ছিন্নতাসহ বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হয়। একই সাথে এই গবেষণায় অনেক রকম শারীরিক সমস্যার কথা উঠে এসেছে।আস