বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘আদর্শিক পথচলা কখনোই সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু দুনিয়া ও আখেরাতের সফলতার জন্য এ পথের বিকল্প নেই। সুতরাং সর্বাবস্থায় আদর্শের ওপর টিকে থাকতে হবে।’
তিনি আজ বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত শাখা দায়িত্বশীলদের সাথে ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দ। আয়োজনে সারা দেশে থেকে শাখা দায়িত্বশীলরা অংশগ্রহণ করেন।
আমীরে জামায়াত বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ও কর্মপন্থা স্পষ্ট। কুরআন প্রদত্ত ও রাসূল সা. প্রদর্শিত জীবনব্যবস্থাকে সার্বিক জীবনে গ্রহণ করে এগিয়ে চলাই আমাদের মূল বিষয়। এজন্য দায়িত্বশীলদের কুরআনের জ্ঞানে সমৃদ্ধ হতে হবে। কারণ, জনশক্তিরা দায়িত্বশীলদের কাছেই কুরআনি সমাধান খুঁজতে আসবে। চূড়ান্ত সফলতা সেই সাহসীরাই পায়, যারা এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। রাসূল সা. বলেছেন, ‘দুর্বল মুমিনের চাইতে শক্তিশালী মুমিন আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়।'”
তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, ছাত্রশিবির সাহসী তরুণদের কাফেলা। ইসলামী আন্দোলন তারাই করতে পারে, যারা স্রোতের বিপরীতে চলার মতো শক্তি, সাহস, যোগ্যতা ও হিম্মত রাখে। একই সাথে পাহাড়সম ধৈর্য থাকতে হবে। রাসূল সা. বলেছেন, ‘সবরের বিনিময় হচ্ছে জান্নাত।’ হকের পথে টিকে থাকতে হলে ধৈর্যের গুরুত্ব অপরিসীম। অপরদিকে দায়িত্বশীলদের হৃদয় প্রশস্ত থাকতে হবে। কারণ, একজন দায়িত্বশীলকে সব ধরনের চিন্তা ও রুচির মানুষকে নেতৃত্বে দিতে হয়। হৃদয়ের বিশালতা নেতৃত্বের অন্যতম গুণাবলি।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা মুমিনদের প্রতি দয়ালু হও আর বাতিলের প্রতি কঠোর হও।’ সুতরাং জনশক্তির প্রতি কোমল হওয়া দায়িত্বশীলদের মৌলিক গুণ। আর বাতিলের প্রতি কঠোর হওয়ার মানে এই নয় যে, তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করতে হবে। বরং সর্বস্তরের জনতার সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করতে হবে।”
তিনি বলেন, “বর্তমান বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আমরাও প্রতিকূলতার মাঝেই এগিয়ে চলেছি। তবে সর্বাবস্থায় আমাদের আদর্শের ওপর টিকে থাকতে হবে। চলমান ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিকল্প নেই। ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে। এ অবস্থায় দায়িত্বশীলদের সর্বোচ্চ সতর্কতা, সাহসিকতা, ধৈর্য ও ঈমানি দৃঢ়তা নিয়ে ময়দানে ভূমিকা পালন করতে হবে। যা-ই ঘটুক, আমরা সাহসিকতা, বুদ্ধিমত্তা ও দৃঢ়তার সাথে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাব, ইনশাআল্লাহ।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘বাংলাদেশ চরম রাজনৈতিক সংকটের দিকে ধাবিত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকার আদায়ের এ গণআন্দোলনে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীলদের চৌকস ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জীবন, রক্ত ও ঘামে এ জমিন উর্বর হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার ওপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে এগিয়ে চললে বিজয় আমাদের ধরা দেবেই, ইনশাআল্লাহ।’
প্রেস বিজ্ঞপ্তি