রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও সাংবাদিকও রয়েছেন।
আজ রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে ছাত্রদলের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে। একপর্যায়ে টিয়ারশেলও নিক্ষেপ করে পুলিশ।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এতে পুলিশ বাধা দেয়। বাধা পেয়ে নেতাকর্মীরা প্রেস ক্লাবের ভেতরে ঢুকে পড়েন। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে তাঁরা একটি মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় আসেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পালটাধাওয়া চলতে থাকে। এসময় ছাত্রদলের কর্মীরা পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং পুলিশও তাদেরকে লাঠিচার্জ করে।
পুলিশের লাঠিপেটায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এসময় বিচ্ছিন্নভাবে তাঁরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছুড়তে এবং গাড়ি ভাঙচুর করতে দেখা যায়। একপর্যায়ে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।
কিছুক্ষণ ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। একপর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবে ঢুকে পড়লে প্রেসক্লাবের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ প্রেসক্লাব চত্বরে ঢুকে পড়লেও সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের পাওয়া যায়নি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনে।
শাহবাগ থানার পুলিশ কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, সংঘর্ষে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। প্রেসক্লাব এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ বলছে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচির জন্য পুলিশের অনুমতি ছিল না ছাত্রদলের। তবে ছাত্রদলের নেতারা বলছে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ ধরনের কর্মসূচিতে পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন হয় না।
পুলিশের রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এখানে সমাবেশের জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু তাদের অনুমতি ছিল না। গত রাতে হঠাৎ করে তারা সমাবেশ ডাকে। সকালে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রেসক্লাবের ভেতরে জড়ো হতে থাকেন। আমরা সকালেও তাদের অনুমতি নিতে বলেছি। কিন্তু তারা অনুমতি না নিয়ে সমাবেশের চেষ্টা করে এবং প্রেসক্লাবের ভেতর থেকে ইটের টুকরা ছোড়ে। এরপরই মূলত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ডিসি সাজ্জাদুর আরো বলেন, সংঘর্ষে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রদলের কয়েকজনকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
-কালেরকন্ঠ