শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ফরাশগঞ্জে ঢাকা অরফানেজ সোসাইটির অনাথ শিশুদের মাঝে উন্নত মানের বস্ত্র, খাদ্য ও করোনার সুরক্ষা সামগ্রীর বিতরণ অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
হানিফ বলেন, সুনামগঞ্জের শাল্লায় একজন ধর্ম ব্যবসায়ীকে নিয়ে মন্তব্যের কারণে ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে সংখ্যালঘু ধর্মের মানুষের ওপরে আঘাত হানা হয়েছে। তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর হয়, লুটপাট করা হয়েছে। আমাদের দুঃখ লাগে আমরা ক্ষমতাসীন দলে আছি। আমরা বারবার শুধু বলি এদের (সাম্প্রদায়িক অপশক্তি) দমন করুন, দমন করুন, দমন হয় না।
তিনি বলেন, আমি আজকে এই ছোটো পরিসর থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো, ব্যবস্থা নিবেন, ব্যবস্থা নিব এ ধরনের বক্তব্য দেশবাসী আর শুনতে চায় না। আমরা চাই এই ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নিন। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিন। যাতে এই সম্প্রদায়ের (মৌলবাদী) বিষবাষ্পের আঘাতে আর কোনো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই ব্যবস্থা করুন। বারবার আমরা শুনি নেয়া হবে, নেয়া হবে।
ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, আমার অনুরোধ থাকবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি, আমার অনুরোধ থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি এই ধরনের উগ্রবাদী আচরণ যাতে আর বরদাশত করতে না হয় দেশবাসীর। এটাই আপনাদের কাছে প্রত্যাশা থাকবে। ভবিষ্যতে আমরা এ ঘটনার পুরাবৃত্তি দেখতে চাই না।
হানিফ বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে পারি নি। আজকে দেখি এই বাংলাদেশ ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ওপরে আঘাত হানা হয়, বাড়িঘর ভাঙচুর হয়, লুটপাট হয়। তখন ভাবি, এটাই কি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। এই বাংলা গড়ার জন্যই কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম? এই বাংলা করার জন্য কি ৩০ লক্ষ মানুষ তাদের জীবন দিয়েছিলো? এই বাংলা করার জন্যই কি ২ লক্ষ মা-বোন তাদের আত্মত্যাগ করেছিলো? আমরা তো এই বাংলা চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির চেয়ারম্যান একেএম রহমতুল্লাহ সভাপতিত্বে এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী মো. সাহিদ, দক্ষিণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিরাজ হোসেন, ফরাশগঞ্জ অরফানেজের সোসাইটির ট্রাস্টি শ্রী কাজল দেবনাথ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য আখলাকুর রহমান মাইনু, প্রফেসর কামরুজ্জামান লাবু, ডা. হেদায়াতুল ইসলাম বাদল, মুজাফফর হোসেন জমদ্দার, পার্থ রহমান, ইদ্রিছ আহমেদ মল্লিক, উমামা বেগম কনক, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কাশেম সীমান্ত, সাইফুল ইসলাম সাইফসহ অন্যরা।