
বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত ২মে থেকে ২২ জুন রাত পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ৫১ দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটি ৭৪৯ জন মারা গেছেন। অথচ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে সেগুলো আসেনি। সরকার এভাবে তথ্য লুকিয়ে দেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) অনলাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মির্জা ফখরুলের দাবি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাতের সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিতেই কাজ করছে সরকার। এ পর্যন্ত কখনোই করোনার সঠিক চিত্র তুলে ধরা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মীর্জা ফখরুল বলেন, করোনার প্রকৃত তথ্যও গুম করছে গুম-খুনের এই সরকার। জনমনে ধারণা গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে যে মৃত ও আক্রান্তের সঠিক চিত্র লুকিয়ে রাখছে ক্ষমতাসীনরা। এই যেমন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী ১ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে করোনা উপসর্গ নিয়ে। গত ১০ দিনের (বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত) হিসাব অনুযায়ী ২৩ জুন সারাদেশে ১৭ জন, ২২ জুন ১৯ জন, ২১ তারিখে ১৬, ২০ তারিখে ১৭, ১৯ জুন ৩৪, ১৮ জুন ১৮, ১৭ জুন ১৬, ১৬ জুন ২৪, ১৫ তারিখে ১৭ জন, ১৪ তারিখে ১৬ ও ১৩ তারিখে ৩০ জন মারা গেছেন জ¦র, কাশি ও শ^াসকষ্ট নিয়ে। যার বেশিরভাগই হিসাবে আসছে না। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সরকারি হিসেবে মারা গেছেন ৬৪ জন। কিন্তু উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩৬০ জন। অর্থাৎ উপসর্গে মারা গেছেন ৫ গুন বেশি মানুষ। যার প্রমাণ এসেছে ২৩ তারিখের গণমাধ্যমগুলোতেই। গত ২ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালু হয়।
তারপর ২২ জুন রাত পর্যন্ত অর্থ্যাৎ ৫১ দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটি ৭৪৯ জন মারা গেছেন। প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ৮ মার্চ। তারপর দুই মাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিট খোলা হয়নি।
সে হিসেবে ঢাকায় উপসর্গ ও উপসর্গহীন মৃত্যুর বড় অংশ হিসাবের বাইরে থেকে গেছে। এর বাইরে অনেকে উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেও মৃত্যুর পর তাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়নি বলেও গণমাধ্যমে নানা খবর এসেছে। সে হিসেবে ঢাকায় আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক অনেক বেশি। বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলসহ অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। জনসংখ্যার দিক থেকে তুলনা করলে ঢাকার প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা উপসর্গ ও উপসর্গ ছাড়াই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের হার ২০ থেকে ২৩ শতাংশ। অর্থ্যাৎ প্রতি ১০০ জনে ২৩ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। ২২ জুন দেশের একটি জাতীয় পত্রিকার প্রতিবেদনেও এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইকোনোমস্টিও প্রতিবেদন করেছে এই সংখ্যা নিয়ে। তারা বলছে, শুধু ঢাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে সাড়ে ৭ লাখ। যা সরকার ঘোষিত সারা দেশের আক্রান্তের সংখ্যার থেকেও ৭ গুণ।