
দেশে করোনা ভাইরাসের বিপর্যস্ত্র অর্থনীতি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য। কমে গেছে সরকারের রাজস্ব আহরণ। ফলে অর্থবছরের শুরুতেই বাড়তি খরচ মেটাতে ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা বাড়ছে সরকারের।
বিদায়ী অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে সরকার। এবারও সেই পথেই হাটছে সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছরের শুরুতেই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ নিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাসের (জুলাই) প্রথম ২৬ দিনে সরকার ব্যাংক থেকে নিট ৬ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। একই সময়ে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। এরমধ্যে আগের নেওয়া ঋণ পরিশোধ করেছে ২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।
অথচ সরকারের চলতি অর্থ বছর হয়েছে মাত্র এক মাসের অধিক হতে চলল। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে সরকারের ঋণ নির্ভরতা বেড়েছে। তবে বেশি ঋণ নিলে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এই জন্য রাজস্ব আয় বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভাল নয়। সরকারের রাজস্ব আদায় কমে গেছে। সঞ্চয়পত্র বিক্রিও কমেছে। কিন্তু সরকারের ব্যয় কমেনি। তাই ব্যয় মেটাতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে সরকারকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধিও অনেক কম। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিকে সচল করতে হলে বেসরকারি ঋণ বিতরণ বাড়াতে হবে। আবার সরকারের ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা কমাতে হবে।’
পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর পাশাপাশি বিদেশি উৎস থেকে কম সুদে ঋণ আনতে পরামর্শ দেন এই তিনি।
সাধারণত বাজেটের ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছরই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয় সরকার। তবে কম রাজস্ব আদায় এবং সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরের শুরু থেকেই ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ওই অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ঋণ নিয়েছিল।
গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার মোট ঋণ নিয়েছিল ৭২ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। যা তার আগের অর্থবছরের (২০১৮-১৯) চেয়ে ১০৯ শতাংশ বেশি।
ব্রেকিংনিউজ