বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া করোনার ডেলটা ভাইরাসে আক্রান্ত মুমুর্ষ রোগীদের শেষ মুহুর্তে নিয়ে আসা হচ্ছে শহরে বা রাজধানীর হাসপাতালে। এ অবস্থায় শেষ পর্যন্ত তাদের অনেকেই দু’ এক দিনের বেশি বাঁচিয়ে রাখা যাচ্ছে না। ফলে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা।
হাসপাতালে শয্যা সংকট, আইসিইউ সঙ্কট আর অক্সিজেন সংকটের বিষয় এখন নিজেদের দুর্ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এদিকে, চিকিৎসার ব্যয়ভার মিটাতে না পেরে অনেক রোগীকে হাসপাতাল থেকে বাড়ী নিয়ে যাচ্ছেন স্বজনেরা। ফলে বাড়িতেও বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা ।
এ অবস্থায় দেশের বিশিষ্ট নাগরিক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ভুলের কারণে মানুষ মরছে ।
আজ রোববার দুপুরে ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক নাগরিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সরকারের ভুলের কারণে মানুষ মরছে। সরকারের ভুলের কারণে শিক্ষা ধ্বংস হচ্ছে। সরকার ভুল পথ হাঁটছে। ভুল পথে হাঁটলেও সংশোধ করা যায় কিন্তু সরকারের সংশোধন করার কোনো ইচ্ছা নাই।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক দলকে ছোট করা ছাড়া সরকারের আর কোনো কাজ আছে বলে আমার মনে হয় না। প্রধানন্ত্রীর কথা আর কাজের মিল নেই। ওনি সব সময় বলছে আমরা যুদ্ধে আছি, কিন্তু ওনিতো যুদ্ধ দেখেন নাই।
দেশে কোনো রাজনীতি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমলারা, ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর কাঁধে বন্দুক ঠেকিয়ে দেশ শাসন করছে। সরকার আজ যেটা বলছে কাল সেটা মানছেন না। সরকার লকডাউন করছেন নিজেই লকডাউন মানছেন না। লকডাউন মানার জন্য গরীব মানুষের উপর অত্যাচার করছে। প্রতিদিন যত জরিমানা হয়েছে সব সাধারণ মানুষ, রিকশাওয়ালা, শ্রমিক, দোকানদারদের করা হয়েছে।
কলকারখানা খোলার ব্যাপারে দ্বিমত নেই উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কলকারখানা খোলার ব্যাপারে কতগুলো নিয়ম আছে। শ্রমিকদের টিকা দিতে হবে। গার্মেন্টস মালিকদেরও দ্বায়িত্ব আছে। শ্রমিকদের তো টিকা দিয়েই কারখানা চালাতে পারেন। যে শ্রমিকদের কাঁধে ভর করে তারা য এত দিন এত লুটপাট করেছে, বেগমপাড়া করেছেন, মালয়েশিয়ায় বাড়ি করেছেন, টাকা পাচার করেছেন, সেই শ্রমিকদের জন্য টিকার টাকা তারাই জোগার করে দিতে পারেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আপনারা দেখছেন গতকাল থেকে কি একটা তুঘলকি কান্ড ঘটছে। এক দিক থেকে শ্রমিকদের বলা হয়েছে আপনারা যদি না আসতে পারেন কোন সমস্যা নাই। আপনাদের চাকরি যাবে না। অন্যদিকে মালিকপক্ষ থেকে শ্রমিকদের টেলিফোনে কপরে বলা হয়েছে, রোববারের মধ্যেই কাজে চাকরিতে যোগ দিতে হবে নইলে চাকরি থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সরকারের অদূরদর্শিতা, জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনে করা এবং সরকারের বাণিজ্যিক স্বার্থ- এই তিনটি কারণে বাংলাদেশ আজ বিপদগ্রস্ত।#
পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান/ বাবুল আখতার/ ১