পশ্চিম তীরে ঘরে ঘরে আতঙ্ক, কুকুর দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা

ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের সীমাহীন আক্রোশ ক্রমেই বাড়ছে। গাজার পাশাপাশি অধিকৃত পশ্চিম তীরেও ভয়াবহ হামলা চালাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের এই সন্ত্রাসী রাষ্ট্র। বোমা-বারুদে ঝলসে নির্জীব-নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে বাস্তুচ্যুতদের শহর জেনিন। বৈদ্যুতিক তারগুলো ঝুলে পড়েছে। কংক্রিটের তৈরি রাস্তাগুলোতে এখন বড় বড় গর্ত। নর্দমার উৎকট দুর্গন্ধে ভারী হয়ে আছে জেনিনের বাতাস।

হত্যা, গুম, গ্রেফতারের ভয়ে ঘরে ঘরে আতঙ্ক। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে পশ্চিম তীরের ‘প্রতিরোধী’ এই শহরটির বাসিন্দাদের। প্রতিশোধের জেরে গোটা একটি অঞ্চলকে ‘নরকখানা’য় পরিণত করছে ইসরাইল সেনারা। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, এএফপি।

৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর আক্রমণ বেড়েছে। অধিকৃত অঞ্চলটি থেকে প্রায় ৪ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করেছে ইসরাইল বাহিনী। কিছুদিন আগে শুধু জেনিন শহর থেকেই ৩৩০ জন বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়। ৮ বছরের একটি শিশুসহ হত্যা করা হয় ৬৭ জনকে। আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, সোমবারও গ্রেফতার করা হয়েছে ৫০ জনকে।

পশ্চিম তীরের বেশিরভাগ আক্রমণই রাতে চালানো হয়। এমনকি জেনিনে দিনে দুবার করেও চলে ইসরাইলের বর্বর হামলা। ইসরাইলের আকস্মিক আক্রমণের ভয়ে প্রতিমুহূর্তেই আতঙ্কিত থাকেন জেনিন বাসিন্দা ফিদা মাতাহীন (৫২)। হামলার ভয়ে সে এবং তার আত্মীয়রা ভোর পর্যন্ত জেগে থাকে। ফিদা বলেন, ‘এই দিনগুলোতে এখানে রাতের ঘুম বলে কিছু নেই।’

তিনি আরও জানান, তাদের অ্যাপার্টমেন্টে গত এক সপ্তাহে দুবার হামলা চালিয়েছে বর্বর ইসরাইল। এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গত দুই মাসে এলাকার ৮০ শতাংশ (প্রায় ১৭০০০) বাসিন্দা জেনিন শহর ত্যাগ করেছেন।

অন্যদিকে গাজায় হামাস অনুসন্ধানে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করেছে ইসরাইলি বাহিনী। হামাসের টানেল অনুসন্ধানে প্রশিক্ষিত কুকুরের সাহায্য নিচ্ছেন তারা।

সম্প্রতি কুকুরের একটি সুড়ঙ্গ অনুসন্ধানের ভিডিও প্রকাশ করে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার এডমি ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘কুকুররা আশ্চর্যজনক কাজ করছে।’ তবে ইসরাইলের কুকুরগুলোর ‘ক্যানাইন ইউনিটে’ ব্যাপক সমালোচনাও করা হয়। বলছেন, মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য কুকুরগুলোকে ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়। এমনকি গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সেপ্টেম্বরে ইসরাইলি সংবাদপত্র হারেৎজের রিপোর্ট অনুযায়ী, সৈন্যরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বাড়িতে মহিলা পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখানোর জন্য কুকুর ব্যবহার করেছিল। ইসরাইলের দাবি, তাদের কুকুরগুলো অভিজাত কমান্ডো ইউনিটকে সমর্থন করে এবং সৈন্যদের জীবন বাঁচায়।

উৎসঃ   juganto
পূর্বের খবরনির্বাচন কমিশন খুবই শক্তিশালী, কারচুপি হতে দেবে না
পরবর্তি খবরবিএনপির আরও দুই নেতার কারাদন্ড, দলের অন্যদের কী অবস্থা?