
করোনাভাইসে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মারা যাওয়া চিকিৎসক সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দিন। আজ বুধবার ভোরে তিনি ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তবে ডা. মঈন উদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চিকিৎসক আতিকুল হক। আজ ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাস দিয়ে এই হত্যার প্রতিবাদ জানান তিনি।
ডা. আতিকুল হকের স্ট্যাটাসটি এখনে তুলে ধরা হলো :
ডা. মঈন এর মৃত্যুতে আমি কোনো শোকগাথা লিখব না। কারণ, হত্যাকাণ্ডের কোনো শোকগাথা হয় না। হয় প্রতিবাদ। আমি এই হত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গতকাল ডাক্তারদের সবচেয়ে বড় গ্রুপে পোস্ট দিয়ে তথ্য নিয়ে নিশ্চিত হয়েই বলছি, উপজেলা, জেলা, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এমনকি করোনা ডেডিকেটেড কোনো হাসপাতালেই পর্যাপ্ত পিপিই দেওয়া হয়নি। যা দেওয়া হয়েছে, তাকে খুব বেশি হলে রেইনকোট বলা যায়। দেশের কোনো হাসপাতালে N95 মাস্ক দেওয়া হয়নি। প্যাকেটের গায়ে N95 লিখে যেই মাস্ক দেওয়া হয়েছে, তা যে শপিং ব্যাগের কাপড় কেটে বানানো। তা এর আগে ছবিসহ পোস্ট দিয়ে জানিয়েছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের যারা এগুলো সাপ্লাই দিয়েছেন, তারা সবাই প্রতিটা চিকিৎসাকর্মীকে সুইসাইডাল মিশনে পাঠিয়েছেন। তাই প্রতিটা মৃত্যুর দায় আপনাদের।
আমি জানি এসব লেখার কারণে আমি শাস্তি পেতে পারি। দেন শাস্তি। কারণ, ওই একটা কাজই আপনারা ভালো পারেন। আর যারা এই সংকটেও পোস্ট পদবি ধরে রাখার জন্য নিজ সহকর্মীদের মৃত্যু দেখেও চুপ থাকছেন, আপনারা কেউই ভাইরাস প্রুফ না। আপনাদের জন্য সমবেদনা।
আরেকটি স্ট্যাটাসে এই চিকিৎসক লেখেন, চিন্তা করে দেখলাম, ডা. মঈন একদিক থেকে ভাগ্যবান। সবাই অন্তত উনার নামটা জানতে পারছেন। যদিও তাতে উনার বা উনার পরিবারের কিছু যায় আসে না। যার যায় সেই বোঝে। কিন্তু এরপরে যে চিকিৎসাকর্মীদের মৃত্যুর মিছিল শুরু হবে (যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা আছে তার ভিত্তিতে বললাম), তখন আর নামটাও কেউ খেয়াল করবে না। তখন হিসাব হবে শুধু সংখ্যায়। আজ এতজন, কাল ততজন, এইভাবে। ২১৯ কে কেউ কেউ ভুলে ২০১৯ ও বলে ফেলতে পারে।