
দেশে আমদানির চার ভাগের এক ভাগ পণ্যই আসে চীন থেকে। অথচ লেনদেন চলে ডলারে। আর ডলার ও টাকার এই রূপান্তরেই সার্ভিস চার্জের নামে প্রতি বছর হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের টাকা বাঁচানোর স্বার্থেই পণ্য কেনাকাটায় চালু করা দরকার চীনা মুদ্রা। সংকট সমাধানে তিন বছর আগেই ব্যাংকগুলোকে চীনা ইউয়ানে এলসি খুলতে নির্দেশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকও। যদিও আজও তা কার্যকর হয়নি মাঠপর্যায়ে।
বিশ্বেই সবচেয়ে দ্রুত বড় হওয়া পণ্যের বাজারগুলোর মধ্যে প্রশ্ন ছাড়াই শীর্ষে মুঠোফোন। প্রযুক্তি ছাড়া নিত্যদিনের জীবন একরকম অনর্থক হয়ে পড়াই এর কারণ। ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও।
কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো বাংলাদেশের মুঠোফোন বাজারের শতভাগই নির্ভরশীল চীনের ওপর। প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি কিংবা অ্যাকসেসরিজ, ব্যবসায়ীরা যার সবই আনেন চীন থেকে। কিন্তু পণ্যের দাম দিতে হয় ডলারে।
ব্যবসায়ীরা জানান, মোবাইলের সকল ধরনের পার্টস চীন থেকে আনতে হয়। কেননা চীন যে রেটে দেয়, সেটা আর কেউ দিতে পারবে না।
ঠিক এ কারণেই ব্যাংকগুলোতে এলসি খোলার পর ডলারের দাম ওঠানামা করলেই তার প্রভাব গিয়ে পড়ে পণ্যের দামে, সঙ্গে রয়েছে সার্ভিস চার্জ। ডলার টাকার হাতবদলের মাঝখান দিয়ে হারিয়ে যায় কয়েক হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সেক্রেটারি বলেন, ইউয়ান ব্যবহারে সুস্পষ্ট ঘোষণার অভাবে ইচ্ছা থাকলেও বাংলাদেশে আসতে পারছে না বড় চীনা বিনিয়োগকারীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র দেশে যত কারেন্সি বাড়বে তত দেশের জন্য সুবিধা হবে। এ জন্য সংকট আঁচ করতে পেরেই ২০১৮ সালে জারি করা এক সার্কুলারে চীনা মুদ্রায় বাণিজ্যের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তা কার্যকর না হওয়ার পেছনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে চীনা রপ্তানিকারকদেরও দায় দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গত অর্থবছরে সাড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার মোট আমদানির মধ্যে শুধু চীন থেকেই দেশে এসেছে এক হাজার ১৫৪ কোটি ডলারের পণ্য। অথচ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিচালনায় আইএমএফের স্বীকৃতি পাওয়া পঞ্চম মুদ্রা চীনা ইউয়ান।