
শরীরে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও প্রসাব বন্ধ হয়ে চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান সাভারের হেমায়েতপুরের বাসিন্দা প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন (৫২)। চিকিৎসার জন্য স্বজনরা রাতভর তাকে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোনো হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়ার শেষ পর্যন্ত তিনি মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন।
সোমবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা ও নিহতের স্বজন জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান।
এর আগে, রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে তীব্র শ্বাসকষ্ট, শরীর ব্যথা ও প্রসাব বন্ধ অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় জসিমকে। ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর তাকে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কোনো হাসপাতালে তার ভর্তি না নেওয়ায় মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ভোরে তিনি মারা যান।
এদিকে, মৃত্যুর আগেই জসিম উদ্দিনের বাড়িটি দুই সপ্তাহের জন্য লকডাউন করা হয়।
জসিমের শ্যালক ফজলুল হক বাংলানিউজকে জানান, জসিমের আগে থেকেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিলো। কিছুদিন হলো তার বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও প্রসাব বন্ধ হয়ে যায়। এরপর রোববার দুপুরে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনার লক্ষণ দেখিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ত্যাগের নির্দেশনা দিলে রাত ৯টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর উপসর্গ দেখে করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করে আইসিইউ এবং ভেন্টিলেশন সাপোর্ট না থাকায় ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে পাঠায় জসিমকে। সেখানে হাসপাতালে করোনা হয়নি উল্লেখ করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাত দেড়টার দিকে তাকে পাঠানো হয়। সেখান থেকেও চিকিৎসা না পেয়ে তাকে নিয়ে মহানগর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানোর কিছু সময় পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর চিকিৎসকেরা মৃত্যুর কারণ হিসেবে স্বজনদের জানান জসিম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সায়েম বাংলানিউজকে বলেন, জসিমকে কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরিয়ে আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তার হৃদযন্ত্র কাজ করছিল না তাই ভর্তির আধাঘণ্টার মধ্যে তিনি এখানে মারা যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বাংলানিউজকে জানান, জসিমের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত্যুর কারণ হিসেবে হৃদরোগ উল্লেখ করেছেন। তারপরও মৃত ব্যক্তির বাড়ি দুই সপ্তাহের জন্য লকডাউন করা হয়েছে।