
সোমবার সকালে কাঠপট্টির লঞ্চঘাট থেকে শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা হয় মর্নিং বার্ড নামের লঞ্চটি। বেঁচে যাওয়া যাত্রী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেছেন, মিরকাদিম পৌরসভার এনায়েতনগর এলাকায় তার বাড়ি। গত ৮ বছর ধরে কাঠপট্টি থেকে লঞ্চে ঢাকায় আসা যাওয়া করে বঙ্গবাজারে কাপড়ের দোকানে কাজ করছেন।
অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মর্নিং বার্ড লঞ্চে করে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তার সঙ্গে মিরকাদিম পৌর এলাকার প্রায় ১০ জন যাত্রী ছিলেন। আড্ডায় তারা লঞ্চটিতে মেতে ছিলেন। লঞ্চটি সকাল সোয়া ৯টার দিকে ফরাশগঞ্জ ঘাট এলাকার কাছে পৌঁছলে ময়ূর-২ লঞ্চটি তাদের লঞ্চটিকে ধাক্কা দেয়। এই সময় লঞ্চটি একপাশে কাত হয়ে গেলে তিনিসহ পাশের সবাই ছিটকে নদীতে পড়তে থাকেন। তার ওপরে পড়ে ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই লঞ্চটি ডুবে গেল। অনেক যাত্রী ডুবে যাওয়ার দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেন তিনি। এ সময় কোনো রকমে সাঁতরে তীরে উঠতে পারায় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান বলে জানান জাহাঙ্গীর হোসেন।
অপর এক যাত্রী ওমর চাঁন জানান, তিনি জীবন বাঁচাতে পানিতে লাফিয়ে পড়েন। ডুবে যাওয়া একাধিক যাত্রী পানির নিচ থেকে বাঁচার জন্য তাকে টেনে ধরেছিলেন। আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে কোনো রকমে তিনি প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।
ফকির চাঁন নামে বেঁচে যাওয়া অপর এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ লঞ্চটিতে বিকট একটি শব্দ শুনতে পান এবং মুহূর্তেই লঞ্চটি পানিতে তলিয়ে যায়। পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় সূর্যের আলো দেখতে পাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় পানির নিচ থেকে কোনোরকমে বেরিয়ে আসেন তিনি। তবে তার সঙ্গে থাকা অপর যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
লঞ্চডুবিতে বেঁচে যাওয়া যাত্রী জুমকি আক্তার, কাকলী বেগম, নাজমা আক্তার, মমিন আলী, গোলাপ হোসেন লঞ্চডুবির মর্মান্তিক মুহূর্তের কথা জানালেন। খুব কাছ থেকে মৃত্যুকে দেখার এমন পরিস্থিতিতে আর কখনো পড়েননি বলেও জানান তারা।
যাত্রী নাজমা আক্তার বলেন, চিকিৎসা নেওয়ার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন তিনি। ঘটনার সময় লঞ্চটির যে পাশ দিয়ে ডুবে যাচ্ছিল তার বিপরীত পাশের জানালা দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারায় তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন।