
করোনা টেস্টের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে এখন রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ দক্ষ টেকনিশিয়ানের অভাবে যেভাবে সোয়াপ নেওয়া হচ্ছে, যেভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং নমুনাগুলো পরিবহন করে ল্যাবে নিয়ে আসা হচ্ছে, সেই প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। নমুনাগুলো সঠিকভাবে পরীক্ষা হচ্ছে না বলেও মনে করছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ। এর ফলে একই রোগীর একেক সময় একেক রকম ফলাফল আসছে। এই ফলাফলের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং মান নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে।
এখন সারা দেশে ৩০টিরও বেশি স্থানে পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু করোনা পরীক্ষার জন্য যে টেকনিশিয়ান এবং কারিগরিভাবে দক্ষ লোক দরকার, এসবের তীব্র অভাব রয়েছে। এই অভাবের কারণে যথাযথভাবে নমুনা নেওয়া যাচ্ছে না এবং নমুনা সংরক্ষণ ও পরিবহনের ক্ষেত্রে ত্রুটি হচ্ছে।
সাধারণ মানুষ তো বটেই, মুগদা জেনারেল হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. সাদেকুল ইসলামের নমুনার ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বিভ্রান্তি। গত ২২ এপ্রিল প্রথম তার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ২৩ এপ্রিল রিপোর্টে দেখা যায় যে তিনি করোনা পজিটিভ। এর প্রেক্ষিতে তিনি কোয়ারেন্টাইনে চলে যান। এর ক’দিন পর তিনি ২৬ এপ্রিল আবার পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষায় দেখা যায় যে তিনি নেগেটিভ। এরকম বিভ্রান্তি হচ্ছে অনেকের ক্ষেত্রে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নমুনা সংগ্রহটা করোনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটার জন্য প্রশিক্ষণ দরকার, যেটা আইইডিসিআর অত্যন্ত যত্নের সাথে করতো। আইইডিসিআর’কে বাদ দেওয়ার ফলে এখন নমুনা সংগ্রহ এবং নমুনাকে ল্যাবে নিয়ে আসাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে বাংলাদেশে করোনা পরীক্ষার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আরেকটি নতুন সংকট তৈরি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।