করোনায় চীনে এক কোটির বেশি মানুষের মৃত্যু, সত্য নাকি গুজব?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে এক কোটিরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। দেশটির সরকার করোনাভাইরাসের প্রকৃত চিত্র আড়াল করেছে। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম এমন দাবি করেছে বলে খবর দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা।

বর্তমানে বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বের ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩২ জন আক্রান্ত এবং ১৭ হাজার ২২৯ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা।

চীন সরকারের সর্বশেষ তথ্য বলছে, দেশটিতে এই ভাইরাসে মারা গেছেন অন্তত ৩ হাজার ২৭৭ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ হাজার ১৭১ জন।
ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি অন্যান্য দেশের কাছে করোনাভাইরাসের প্রকৃত চিত্র আড়াল করছে চীন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা এক কোটিরও বেশি। এই দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য চীনের মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদানকারী কোম্পানিগুলার কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল বলে জানিয়েছে ওই সংবাদমাধ্যমটি। চীনা মোবাইল কোম্পানিগুলোর সরবরাহকৃত তথ্যে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা দেড় কোটিরও বেশি কমে যায়।

ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাদের মধ্যে ৮০ লাখের বেশি গ্রাহক প্রতিদিন মোবাইল নেটওয়ার্কে সচল থাকতেন। তারা কোথায় গেলেন?
সংবাদমাধ্যমটি তাদের অনুসন্ধান এখানেই শেষ করেনি। ওই দেড় কোটি গ্রাহক আগে মোবাইলের নেটওয়ার্কে সচল ছিলেন; বর্তমানে তারা মোবাইল নেটওয়ার্কে নেই। এমনকি তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ রয়েছে। তাদের মোবাইল নম্বরগুলোও কেউ ব্যবহার করছেন না।

ওই সংবাদমাধ্যমটি আরও যে দাবি করেছে সেটি বেশ রোমহর্ষক। দেড় কোটি সক্রিয় মোবাইল নম্বর যদি ডিঅ্যাক্টিভেটও করা হয় তাহলেও তো করোনায় মৃতের সংখ্যা কয়েক লাখ হওয়া উচিত। যদি একজন মানুষ একটি মোবাইলও ব্যবহার করেন তাহলেও তাদের দুটি সিম কার্ড থাকার কথা। সেই অনুযায়ী একটি সিম বন্ধ করে দিলেও ৭৫ লাখ মানুষ কমে যায়। এছাড়া যদি ধরে নেয়া হয় যে একজন মানুষ চারটি সিম ব্যবহার করেন তাহলেও মৃত মানুষের সংখ্যা ৩৭ লাখ ৫০ হাজার।

সংবাদমাধ্যমটি আরও একটি বিস্ময়কর তথ্য দিয়েছে। বলছে, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের পর চীনে লাখ লাখ মানুষকে পাওয়া যাচ্ছে না।
ট্যাবলয়েটটির প্রতিবেদন সত্য-নাকি মিথ্যা? প্রতিবেদনের শুরুতেই ট্যাবলয়েটটি বলছে, চীনে গণমাধ্যমে স্বাধীনতা নেই এবং দেশটির সরকার গণমাধ্যম পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে। ট্যাবলয়েটটির এমন যুক্তির কারণে অনেকেই বিশ্বাস করছেন যে প্রতিবেদনটি সত্য হতে পারে।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই যুগে কোনও দেশের সরকার লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা কখনই গোপন করে রাখতে পারে না। ফেসবুক, টুইটার ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্য অনায়াসেই ছড়িয়ে পড়তো। যে কারণে করোনাভাইরাসে চীনে কোটি মানুষের প্রাণহানির খবরটি সত্য নয় সেটি বলা যায়।