শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় যে, ফেসবুক ভিডিওটি সরাতে সম্মত হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বরাতে এমন সংবাদ প্রকাশ করে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টাল।
সময় টিভির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, “শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় টেলিফোনে সংবাদমাধ্যমকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জানান, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে। ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ রশীদ দিয়ার সঙ্গেও কথা হয়েছে। ফেসবুক অফিসিয়ালি জানিয়েছে, তারা খুব দ্রুতই আল জাজিরার প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেবে। ”
দৈনিক ইত্তেফাকের অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, “উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর আল জাজিরার লিংক বন্ধ করার বিষয়টি বিবেচনা করছে ফেসবুক ও ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। শনিবার আমাদের ই-মেইল করে এমন কথাই তারা জানিয়েছে। ইত্তেফাককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ”
ওই সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়, “তিনি (মোস্তাফা জব্বার) বলেন, এমন কিছু আসতে পারে আমরা আগেই জানতাম। ফলে আমরা তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। তখন তারা বলেছিল, এভাবে প্রত্যেকটা কনটেন্ট মনিটর করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা জানিয়েছিল, আদালতের কোনো নির্দেশনা থাকলে তাদের জানাতে, তারা ব্যবস্থা নেবে। আমরা আদালতের নির্দেশের কপি পাঠিয়েছি, এখন তারা বিষয়টি বিবেচনা করছে। আশা করি দ্রুতই তারা সিদ্ধান্ত জানাবে। ”
এনটিভির অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশ বিষয়ে আল জাজিরায় প্রচারিত রিপোর্টটি সরিয়ে ফেলতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। ”
তবে ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। উচ্চ আদালতের কোনো নির্দেশনা লিখিত আকারেও পায়নি বলে জানিয়েছে ফেসবুক। ফেসবুকের এমন দাবি ‘সত্য’ বলে বাংলানিউজকে জানান খোদ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বাংলাদেশে ফেসবুকের জনসংযোগ কার্যক্রম দেখভাল করা এক এজেন্সির পক্ষ থেকে ই-মেইল বার্তায় বলা হয়, “আমরা (ফেসবুক) বিটিআরসির কাছ থেকে ডকুমেন্টারি সরিয়ে নেওয়ার জন্য হাইকোর্টের লিখিত নির্দেশনা পাইনি। আমরা এই বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেইনি। ”
ফেসবুকের এমন বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেখেন আমি বলিনি যে, তারা সরিয়ে ফেলবে এমন কোনো বক্তব্য দিয়েছে। যারা বলেছে তারা এই সম্পর্কিত নিজস্ব তথ্য দিয়েছে। আমরা যেটা বলেছি সেটা হচ্ছে, আমাদের কাছে যে বিষয়টা গুরুত্ব বহন করে সেটি ইউটিউব, ফেসবুকের কাছে আল জাজিরার নিউজ প্রকাশিত হওয়ার আগে ও পরে জানিয়েছি। তারা আমাদের কাছে যে বিষয়টি চেয়েছিল সেটা হচ্ছে আদালতের নির্দেশনা। আদালতে যখন রিট হয় সেই রিটের প্রেক্ষিতে আদালতের যে নির্দেশনা তার জন্য লইয়ার্স লেটার পাঠিয়েছি, কারণ আদালতের নির্দেশনা আমাদের কাছে এখনও এসে পৌঁছায়নি। ওরা (ফেসবুক) যেটা বলছে সেটা একদিক থেকে ঠিক। কারণ হাইকোর্টের নির্দেশনা মানে হাইকোর্টের রায়। ওই রায় তো আমাদের হাতে আসেনি, পাঠাবো কোত্থেকে? রায় হাতে আসার সাথে সাথে ওদেরকে পাঠাবো। এখন যেটা পাঠিয়েছি সেটা লইয়ার্স পেপার।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে আপনার বরাতে এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে–এমন প্রশ্ন করা হলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, আপনাদের নিজেদের হাতে কলম আছে, যা খুশি লিখে দিতে পারেন। কেউ তো কিছু বলতে পারবে না। আমার কাছে আপনি বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন, আমার বক্তব্য স্পষ্ট করে বললাম।